তাওহীদ বিষয়ক বই ডাউনলোড করতে নিচে বইয়ের নামের উপর ক্লিক করুন।
১। আত তাওহীদঃ চিন্তা ক্ষেত্রে ও জীবনে এর অর্থ ও তাৎপর্য – ডাঃ ইসমাইল রাজী আল ফারুকি
২। আত্তাওহীদ – ড. মোহাম্মাদ শফিউল আলম ভুঁইয়া
৩। আল কুরানের আলোকে শিরক ও তওহীদ – মুহাম্মদ আবদুর রহীম
৪। আল্লাহ আমার প্রভু – সৈয়দ আলী আহসান
৫। আল্লাহ ইচ্ছায় সবকিছু হয় তথ্যটির প্রচলিত ও প্রকৃত ব্যাখ্যা – মোঃ মতিয়ার রহমান
৬। আল্লাহ কি নিরাকার সর্বত্র বিরাজমান – হাফেয মুহাম্মদ আইয়ুব
৭। আল্লাহ কোথায় আছেন – দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী
৮। আল্লাহ কোথায় – মুহম্মদ ইকবাল বিন ফাখরুল
৯। আল্লাহ ক্ষমাশীল – রফিক আহমাদ
১০। আল্লাহ তাআলা কোথায় আছেন – আখতারুজ্জামান মুহাম্মদ সুলাইমান
১১। আল্লাহ তাআলার দশ অসিয়ত – আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান
১২। আল্লাহ তাআলার নান্দনিক নাম ও গুণসমগ্র কিছু আদর্শিক নীতিমালা – মুহাম্মদ বিন সালেহ আল উসাইমীন
১৩। আল্লাহ তায়ালার সাথে মানুষের সম্পর্ক – অধ্যাপক গোলাম আযম
১৪। আল্লাহ তার নুরকে বিকশিত করবেনই – মাসুদা সুলতানা রুমী
১৫। আল্লাহ পাক স্রষ্টা মহান – দেলওয়ার বিন রশিদ
১৬। আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন – ড. এ আর খান
১৭। আল্লাহকে ঋণ দান – রফিক আহমাদ
১৮। আল্লাহকে পেতে মাধ্যম গ্রহণ – ইমাম ইবনে তাইমিয়া
১৯। আল্লাহকে সম্মান দেওয়া ও তাকে গালমন্দকারীর বিধান – আব্দুল আযীয আত ত্বারীফি
২০। আল্লাহর অতিথি – নাজমা ফেরদৌসী
২১। আল্লাহর অনেক নাম – হারুন ইয়াহিয়া
২২। আল্লাহর অবস্থান কোথায় – মুহম্মদ ইকবাল বিন ফাখরুল
২৩। আল্লাহর দৃষ্টিতে কে ঈমানদার কে মুশরিক – খন্দকার আবুল খায়ের
২৪। আল্লাহর নাম ও গুনাবলী – আব্দুল হামীদ আল মাদানী
২৫। আল্লাহর পরিচয় – এ কে এম নাজির আহমদ
২৬। আল্লাহর পরিচয় ও মানুষের পরিচয় – শামছুল হক ফরিদপুরী
২৭। আল্লাহর সুন্দর নাম সুমহের ব্যাখ্যা – সাইয়েদ মুহাম্মদ মোস্তফা আল বাকরী
২৮। আল্লাহ্র দৃষ্টিতে কে ইমান্দার কে মুশরিক – খন্দকার আবুল খায়ের
২৯। আশ শিরক – আ.ন.ম. রফীকুর রহমান
৩০। আসমাউল হুসনা – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী
৩১। ইসলামের দৃষ্টিতে শিরক – আমীন আহসান ইসলাহী
৩২ কিয়ামত দিনের প্রস্ততি – আল্লামা ইবনে হাজার আসকালিনী
৩৩। কিয়ামতের আলামত – আব্দুল্লাহ বিন শাহেদ
৩৪। কিয়ামতের আলামত – আব্দুল্লাহ শাহেদ আল মাদানী
৩৫। কিয়ামতের আলমত – মুহাম্মদ ইকবাল কিলানী
৩৬। কিয়ামতের আলামত – হারুন ইয়াহইয়া
৩৭। কিয়ামতের আলামত ও তার বর্ণনাঃ মৃত্যুর পর অন্নত যে জীবন – ইকবাল কিলানী
৩৮। কিয়ামতের ছোটবড় নিদর্শন সমূহ – মোস্তাফিজুর রহমান
৩৯। কিয়ামতের পরীক্ষা – মোহাম্মদ ইলইয়াস আত্তার কাদেরী রযবী
৪০। কিয়ামতের বর্ণনা – মুহাম্মদ ইকবাল কিলানী
৪১। কিয়ামতের ভয়াবহতা ও তারপর – আব্দুল মালেক আলি আল কুলাইব
৪২। কুরআন কিয়ামত পরকাল – মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন
৪৩। কুরআন কোয়াসার শিঙ্গায় ফুৎকার – মুহাম্মাদ আনোয়ার হুসাইন
৪৪। কুরআন মহাবিশ্ব মহাধ্বংস – মুহাম্মাদ আনোয়ার হুসাইন
৪৫। কুরআন মহাবিশ্ব মূলতত্ত্ব – মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন
৪৬। কুরআনে আঁকা আখিরাতের ছবি – এ. বি. এম. এ. খালেক মজুমদার
৪৭। কুরআনে কিয়ামত ও শেষ বিচার এবং জান্নাত ও জাহান্নামের চিত্র – মুহাম্মদ শামসুল হক চৌধুরী
৪৮। কালিমাতুশ শাহাদাহ – গাজী মুহাম্মদ তানজীল
৪৯। কালিমার মর্মকথা – আকরামুজ্জামান বিন আব্দুস সালাম
৫০। কালেমা তাইয়েবাঃ একটি জীবন আদর্শের দাওয়াত – মুহাম্মদ আজিজুর রহমান খান
৫১। কালেমা তাইয়েবা বনাম কালেমা খাবিছা – আহমদ খোদা বখশ
৫২। কালেমা তাইয়্যেবা – মুহাম্মদ নাসীন শাহরুখ
৫৩। কালেমা ত্যাইয়েবা – মুহাম্মদ আবদুর রহীম
৫৪। কালেমা ত্যাইয়েবা – মুহাম্মদ আব্দুল্লাহহেল কাফী
৫৫। কালেমা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ – আব্দুল আযীয বিন আব্দুল্লাহ বিন বায
৫৬। কালেমা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ এর অর্থ শর্তসমূহ এবং ব্যাক্তি ও সমাজ জীবনে তার প্রভাব – ড. সালেহ বিন ফাওযান
৫৭। কালেমা শাহাদাতের হাকীকত – আতিয়্যা মোহাম্মদ সাঈদ
৫৮। কালেমার মর্মকথা – মুহাম্মদ মতিউল ইসলাম বিন আলি আহমাদ
৫৯। কালেমারর হাকিকত – খন্দকার আবুল খায়ের
৬০। কিতাবুত তাওহিদ ও এর ব্যাখ্যা – মুহাম্মদ বিন সুলাইমান আত তামীমী
৬১। কিতাবুত তাওহীদ – মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওয়াব
৬২। কিতাবুত তাওহীদের ব্যাখ্যা – সালেহ বিন আব্দুল আযীয
৬৩। কিভাবে তাওহীদের দিশা পেলাম – মুহাম্মদ বিন জামীল যায়নু
৬৪। চারটি নীতি – মুহাম্মাদ ইবন আবদুল ওয়াহহাব
৬৫। তাওহিদের মর্মকথা – আবদুর রহমান বিন নাসের আস সা দী
৬৬। তাওহীদ – আব্দুল হামীদ আল ফাইযী
৬৭। তাওহীদ এবং কালিমা তাইয়িবার তাৎপর্য – অনুবাদ আবুল কালাম আযাদ
৬৮। তাওহীদ এবং শিরক – আবুল কালাম আযাদ
৬৯। তাওহীদ ও আকাইদ – সানাউল্লাহ নজির আহমদ ও ইকবাল হোছেন মাছুম
৭০। তাওহীদ ও ঈমান অধ্যায় – মুহাম্মদ ইবন ইবরাহীম আত-তুআইজিরী
৭১। তাওহীদ ও তার প্রমাণাদি আকীদার ব্যাপারে ৫০ টি প্রশ্নোত্তর – মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহহাব
৭২। তাওহীদ কৌমুদি – আব্দুল হামীদ ফাইযী আল মাদানী
৭৩। তাওহীদ জিজ্ঞাসা জবাব ১ম খণ্ড – কাজী মুহাম্মদ ইবরাহীম
৭৪। তাওহীদ পরিচিতি – ড. সালেহ ইবন ফাওযান আল ফাওযান
৭৫। তাওহীদ রেসালাত ও আখিরাত – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী
৭৬। তাওহীদ শির্ক তিন তাকভীর – অধ্যাপক গোলাম আযম
৭৭। তাওহীদের কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় – অনুবাদ মুহাম্মদ শামাউন আলি
৭৮। তাওহীদের কালেমাঃ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ – ড. আব্দুর রাযযাক
৭৯। তাওহীদের ত্বত্ত্বকথা – মুহাম্মদ আবদুর রহীম
৮০। তাওহীদের বিশ্বাস – মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওয়াহহাব
৮১। তাওহীদের মর্মকথা – আব্দুর রহমান বিন নাসের সাদী
৮২। তাওহীদের মাসায়েল – মুহাম্মদ ইকবাল কিলানী
৮৩। তাওহীদের মূল নীতিমালা – ড. আবু আমিনাহ বেলাল ফিলিপস
৮৪। তাওহীদের সরল ব্যাখ্যা – মোস্তাফিজুর রহমান ইবন আব্দুল আযীয
৮৫। তাওহীদের হাকীকত – কাউসর বিন খালিদ
৮৬। তাগুত ১ম খণ্ড – আবু মুসয়াব
৮৭। তোমার রব কে – মুহাম্মদ ইবন আহমদ ইবন মুহাম্মদ আল আম্মারী
৮৮। প্রশ্নোত্তরে তাওহীদ – ড. ইবরাহিম ইবন সালেহ আল খুদ্বায়রী
৮৯। প্রশ্নোত্তরে সহজ তাওহীদ শিক্ষাঃ চার ইমামের আকীদা অবলম্বনে – বিশিষ্ট ওলামায়ে কেরাম
৯০। বড় শিরক কি ও কত প্রকার – মোস্তাফিজুর রহমান বিন আব্দুল আজিজ
৯১। বিভিন্ন ধর্মে আল্লাহ সম্পর্কে ধারণা – ডা. জাকির নায়েক
৯২। ভ্রান্ত তাবিজ কবচ – মোহাম্মদ বিন সোলায়মান আল মোফাদ্দা
৯৩। মহান আল্লাহর নাম ও গুণাবলী – আব্দুল হামীদ ফাইযী
৯৪। মহান আল্লাহর মারিফাত – হারুন ইয়াহিয়া
৯৫। মহান স্রষ্টার একত্ববাদ ও আধুনিক বিজ্ঞান – মোঃ ওসমান গণি
৯৬। মুখতাসারুল ফিকহিল ইসলামীঃ তাওহীদ ও ঈমান – মুহাম্মদ বিন ইবরাহীম বিন আব্দুল্লাহ আত তুআইজিরী
৯৭। যুক্তির কষ্টিপাথরে আল্লাহ্র অস্তিত্ব – খন্দকার আবুল খায়ের
৯৮। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ – আব্দুল আযীয বিন আব্দুল্লাহ বিন বায
৯৯। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ এর অর্থ – ডাঃ সালেহ বিন ফাওযান
১০০। শিরক – ড. মোঃ সেলিম রেজা
১০০। শিরক কি ও কেন ১ম খণ্ড – ড. মুহাম্মদ মুযাম্মিল আলি
১০১। শিরক কি ও কেন ২য় খণ্ড – ড. মুহাম্মদ মুযাম্মিল আলি
১০২। শিরক বিহীন ঈমানের মর্যাদা – মোহাম্মদ সিফাত হাসান
১০৩। শিরকের বাহন – ড. ইব্রাহিম বিন মুহাম্মদ আল বুরাইকান
১০৪। শিরকের বেড়াজালে উম্মত বেসামাল – নুরজাহান বিনতে আব্দুল মজিদ
১০৫। শিরকের শিকড় পৌঁছে গেছে বহুদুর – মাসুদা সুলতানা রুমী
১০৬। সরল তাওহিদ – আব্দুল্লাহ বিন আহমাদ
১০৭। স্রষ্টা ও ধর্ম সত্যের সন্ধানে – মাহমুদ আব্দুল্লাহ মাহী
১০৮। স্রষ্টার সন্ধানে – মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান
১০৯। স্রষ্টার সৃষ্টি অপার বিস্ময় – আই. সি.এস পাবলিকেশন্স
তৌহিদ পরিচিতঃ তাওহীদ শব্দটি (وحد) ক্রিয়ামূল থেকে উৎপত্তি হয়েছে। এর আভিধানিক অর্থ কোনো জিনিসকে একক হিসেবে নির্ধারণ করা। ‘না’ বাচক ও ‘হ্যাঁ’ বাচক উক্তি ব্যতীত এটির বাস্তবায়ন হওয়া সম্ভব নয়। অর্থাৎ একককৃত বস্তু ব্যতীত অন্য বস্তু হতে কোনো বিধানকে অস্বীকার করে একককৃত বস্তুর জন্য তা সাব্যস্ত করা। উদাহরণস্বরূপ আমরা বলব, “আল্লাহ ছাড়া সত্য কোনো মা‘বূদ নেই” একথার সাক্ষ্য দেওয়া ব্যতীত কোনো ব্যক্তির তাওহীদ পূর্ণ হবে না। যে ব্যক্তি এ সাক্ষ্য প্রদান করবে, সে আল্লাহ ছাড়া অন্যান্য সকল বস্তু হতে উলুহিয়্যাতকে (ইবাদাত) অস্বীকার করে শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য তা সাব্যস্ত করবে। কারণ, শুধুমাত্র নাফী বা ‘না’ বাচক বাক্যের মাধ্যমে কোনো বস্তুকে গুণাগুণ থেকে মুক্ত করা হয়। আর শুধুমাত্র ‘হ্যাঁ’ বাচক বাক্যের মাধ্যমে কোনো বস্তুর জন্য কোনো বিধান সাব্যস্ত করলে সেই বিধানে অন্যের অংশ গ্রহণকে বাধা প্রদান করে না। যেমন. উদাহরণস্বরূপ যদি আপনি বলেন, ‘অমুক ব্যক্তি দাঁড়ানো’। এ বাক্যে আপনি তার জন্য দণ্ডায়মান হওয়াকে সাব্যস্ত করলেন। তবে আপনি তাকে দণ্ডায়মান গুণের মাধ্যমে একক হিসাবে সাব্যস্ত করলেন না। হতে পারে এ গুণের মাঝে অন্যরাও শরীক আছে। অর্থাৎ অমুক ব্যক্তির সাথে অন্যান্য ব্যক্তিগণও দাঁড়িয়ে থাকতে পারে। আর যদি বল, “যায়েদ ব্যতীত আর কেউ দাঁড়ানো নেই” তবে আপনি দণ্ডায়মান হওয়াকে শুধুমাত্র যায়েদের সাথে সীমিত করে দিলেন। এ বাক্যে আপনি দন্ডায়মানের মাধ্যমে যায়েদকে একক করে দিলেন এবং দাঁড়ানো গুণটিকে যায়েদ ব্যতীত অন্যের জন্য হওয়াকে অস্বীকার করলেন। এভাবেই তাওহীদের প্রকৃত রূপ বাস্তবায়ন হয়ে থাকে। অর্থাৎ নাফী (না বোধক) ও ইসবাত (হ্যাঁ বোধক) বাক্যের সমন্বয় ব্যতীত তাওহীদ কখনো প্রকৃত তাওহীদ হিসেবে গণ্য হবে না।
তাওহিদ তিন প্রকার। যথা :
২/১. توحيد الربوبية / তাওহিদুর রুবুবিয়্যাহ : আল্লাহকে তাঁর কর্মসমূহে একক হিসেবে মেনে নেয়া। যেমন সৃষ্টি করা, রিজিক দেয়া, জীবন-মৃত্যু দান করা ইত্যাদি। নবি করিম (সা.) এর আগমনের পূর্বে কাফেরগণ তাওহিদের এই প্রকারের স্বীকৃতি দিয়েছিল। আল্লাহ আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَلَئِنْ سَأَلْتَهُمْ مَنْ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ لَيَقُولُنَّ اللَّهُ
‘আপনি যদি তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন, নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডল কে সৃষ্টি করেছে? তারা অবশ্যই বলবে, আল্লাহ্। বলুন, সকল প্রশংসাই আল্লাহর। বরং তাদের অধিকাংশই জ্ঞান রাখে না।’ [সুরা লুকমান : ২৫]
الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ
‘যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ তায়ালার জন্য, যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা।’ [সুরা ফাতিহা : ০২]
اللَّهُ الَّذِي خَلَقَكُمْ ثُمَّ رَزَقَكُمْ ثُمَّ يُمِيتُكُمْ ثُمَّ يُحْيِيكُمْ هَلْ مِنْ شُرَكَائِكُمْ مَنْ يَفْعَلُ مِنْ ذَلِكُمْ مِنْ شَيْءٍ سُبْحَانَهُ وَتَعَالَى عَمَّا يُشْرِكُونَ
‘আল্লাহ্ই তোমাদের সৃষ্টি করেছেন, অত:পর রিযিক দিয়েছেন, এরপর তোমাদের মৃত্যু দেবেন, এরপর তোমাদের জীবিত করবেন। তোমাদের শরীকদের মধ্যে এমন কেউ আছে কি, যে এসব কাজের মধ্যে কোন একটিও করতে পারবে? তারা যাকে শরিক করে, আল্লাহ তা থেকে পবিত্র ও মহান।’ [সুরা রুম : ৪০]
২/২. توحيد الألوهية / তাওহিদুল উলুহিয়্যাহ : ইবাদতের ক্ষেত্রে আল্লাহকে একক নির্ধারণ করা। যেমন : সালাত, নযর-মানত, দান-সদকা ইত্যাদি। যাবতীয় ইবাদত এককভাবে আল্লাহর উদ্দেশ্যে করার জন্যই সমস্ত নবী-রাসুলগণকে প্রেরণ করা হয়েছে, আসমানি কিতাবসমূহ নাযিল করা হয়েছে। আল্লাহ আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَاعْبُدُوا اللَّهَ وَلا تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئاً
‘‘আর ইবাদত কর আল্লাহর, শরিক করো না তাঁর সাথে অপর কাউকে’’। [সুরা নিসা : ৩৬]
وَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ مِنْ رَسُولٍ إِلاَّ نُوحِي إِلَيْهِ أَنَّهُ لا إِلَهَ إِلاَّ أَنَا فَاعْبُدُونِ
‘‘আপনার পূর্বে আমি যে রাসুলই প্রেরণ করেছি, তাকে এ আদেশই প্রেরণ করেছি যে, আমি ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নেই। সুতরাং আমারই এবাদত কর’’। [সুরা আম্বিয়া : ২৫]
وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَسُولاً أَنْ اُعْبُدُوا اللَّهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ
‘‘আমি প্রত্যেক উম্মতের মধ্যেই রাসুল প্রেরণ করেছি এই মর্মে যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো এবং তাগুত থেকে নিরাপদ থাকো’’। [সুরা নাহল : ৩৬]
২/৩. توحيد الأسماء والصفاة / তাওহিদুল আসমা ওয়াস সিফাত : সমস্ত সুন্দর-সুন্দর নাম ও গুণাবলি আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.) আল্লাহর জন্য সাব্যস্ত করেছেন সেগুলোকে কোন প্রকার পরিবর্তন, অস্বীকৃতি ও ধরন-গঠন নির্ধারণ ছাড়াই সাব্যস্ত করা ও মেনে নেয়া। আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَلِلَّهِ الأَسْمَاءُ الْحُسْنَى فَادْعُوهُ بِهَا
‘আল্লাহর অনেক সুন্দর-সুন্দর নাম আছে, সেই নামের মাধ্যমে তোমরা তাকে ডাক।’ [সুরা আরাফ : ১৮০]
اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ لَهُ الْأَسْمَاءُ الْحُسْنَى
‘‘আল্লাহ্ তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য ইলাহ নেই। সব সৌন্দর্যমন্ডিত নাম তাঁরই।’ [সুরা ত্বহা : ০৮]
قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ ◌ اللَّهُ الصَّمَدُ ◌ لَمْ يَلِدْ ◌ وَلَمْ يُولَدْ وَلَمْ ◌ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ
‘বলুন, তিনি আল্লাহ্, এক। আল্লাহ্ অমুখাপেক্ষী। তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাকে জন্ম দেয়নি এবং তার সমতুল্য কেউ নেই’’। [সুরা ইখলাস : ০১ – ০৪]
০৩. তাওহিদের গুরুত্ব
মুসলিমদের জন্য তাওহিদ বা একত্ববাদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই তাওহিদের পরিশুদ্ধি ছাড়া কেউ মুসলিম হতে পারে না। প্রাণ ছাড়া দেহ যেমন অকার্যকর, তেমনি বিশুদ্ধ তাওহিদ ছাড়া আমলও অকার্যকর। তাই ইহ ও পরকালীন জীবনে মুক্তির জন্য তাওহিদের আকিদা পোষণ করা আমাদের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নিম্নে কুরআন ও সহিহ সুন্নাহর আলোকে আকাইদ ও তাওহিদের গুরুত্ব তুলে ধরা হলো।
৩/১. আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নবি-রাসুলগণকে পাঠিয়েছেন তাঁর একত্ববাদের দিকে আহবান করার জন্য। কুরআনের অধিকাংশ সুরায় তাওহিদের প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। যেমন, ইরশাদ হচ্ছে :
وَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ مِنْ رَسُولٍ إِلاَّ نُوحِي إِلَيْهِ أَنَّهُ لا إِلَهَ إِلاَّ أَنَا فَاعْبُدُونِ
‘আপনার পূর্বে আমি যে রাসুলই প্রেরণ করেছি, তাকে এ আদেশই প্রেরণ করেছি যে, আমি ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নেই। সুতরাং আমারই ইবাদত করো।’ [সুরা আম্বিয়া : ২৫]
৩/২. রাসুল (সা.) তের বছরের মাক্কি জীবনে একত্ববাদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। আল্লাহ্ তায়ালা বলেন,
قُلْ إِنِّي لَا أَمْلِكُ لَكُمْ ضَرًّا وَلَا رَشَدًا
‘হে নবি আপনি বলুন! আমি শধুমাত্র আমার রবকে ডাকি এবং তাঁর সাথে অন্য কাউকে শরিক করি না।’ [সুরা জিন : ২০]
৩/৩. নবি করিম (সা:) তাঁর সাহাবিগণকে সর্বপ্রথম মানুষকে তাওহিদের প্রতি আহ্বান জানানোর শিক্ষা দেন। যেমন, মুয়ায (রা.)-কে ইয়ামেনের গভর্ণর করে পাঠানোর সময় রাসুল (সা.) বলেছিলেন :
ادْعُهُمْ إِلَى شَهَادَةِ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، وَأَنِّي رَسُولُ اللَّهِ، فَإِنْ هُمْ أَطَاعُوا لِذَلِكَ فَأَعْلِمْهُمْ أَنَّ اللَّهَ قَدِ افْتَرَضَ عَلَيْهِمْ خَمْسَ صَلَوَاتٍ فِي كُلِّ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ، فَإِنْ هُمْ أَطَاعُوا لِذَلِكَ فَأَعْلِمْهُمْ أَنَّ اللَّهَ افْتَرَضَ عَلَيْهِمْ صَدَقَةً فِي أَمْوَالِهِمْ، تُؤْخَذُ مِنْ أَغْنِيَائِهِمْ وَتُرَدُّ عَلَى فُقَرَائِهِمْ
‘সেখানের অধিবাসীদেরকে আল্লাহ ব্যতিত কোন ইলাহ নেই এবং আমি (মুহাম্মদ) আল্লাহর রাসুল- এ কথার সাক্ষ্যদানের দাওয়াত দিবে। যদি তারা এ কথা মেনে নেয়, তাহলে তাদেরকে জানিয়ে দিবে, আল্লাহ তাদের উপর প্রতিদিন ও রাতে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরজ করেছেন। তারা যদি এ কথা মেনে নেয়, তবে তাদেরকে জানিয়ে দিবে, আল্লাহ তাদের সম্পদের উপর সাদকা (জাকাত) ফরজ করেছেন। তাদের মধ্যকার (নিসাব পরিমাণ) সম্পদশালীদের নিকট থেকে (জাকাত) উসুল করে তাদের দরিদ্রদের মধ্যে বিতরণ করে দেওয়া হবে।’ [সহিহ বুখারি : ১৩১০ (ই.ফা)]
০৪. ফজিলত, উপকারিতা ও তাৎপর্য
মানবজীবনে তাওহিদ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যার উপর ইহকাল ও পরকালের কল্যাণ-অকল্যাণ, সফলতা-ব্যর্থতা নির্ভরশীল। তাওহিদের উপর অটল ও অবিচল থাকা প্রত্যেক ব্যক্তির উপর ফরয। তাওহিদের অনেক উপকারিতা রয়েছে। নিম্নে কয়েকটি উপকারিতা তুলে ধরা হলো :
৪/১. হিদায়াত ও নিরাপত্তা লাভ। আল্লাহ্ তায়ালা ইরশাদ করেন :
الَّذِينَ آَمَنُوا وَلَمْ يَلْبِسُوا إِيمَانَهُمْ بِظُلْمٍ أُولَئِكَ لَهُمُ الْأَمْنُ وَهُمْ مُهْتَدُونَ
‘যারা ঈমান এনেছে এবং শিরকের সাথে মিলায়নি, তাদের জন্য রয়েছে নিরাপত্তা এবং তারাই হিদায়াত প্রাপ্ত।’ [সুরা আনয়াম : ৮২]
৪/২. আখেরাতে চিরস্থায়ী সুখ ও জান্নাত লাভ।
عن عِتْبَانَ بنِ مالكٍ رضي الله عنه “قال، قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : فَإِنَّ اللَّه قَدْ حَرَّمَ عَلَى النَّارِ مَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ يَبْتَغِي بِذَلِكَ وَجْهِ اللَّهِ
ইতবান ইবনু মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলবে তার জন্য আল্লাহ জাহান্নাম হারাম করে দিবেন।’ [সহিহ বুখারি : ৪২৫, সহিহ মুসলিম : ৩৩]
৪/৩. ক্ষমা লাভ।
عَنْ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ قَالَ اللَّهُ يَا ابْنَ آدَمَ إِنَّكَ مَا دَعَوْتَنِي وَرَجَوْتَنِي غَفَرْتُ لَكَ عَلَى مَا كَانَ فِيكَ وَلاَ أُبَالِي يَا ابْنَ آدَمَ لَوْ بَلَغَتْ ذُنُوبُكَ عَنَانَ السَّمَاءِ ثُمَّ اسْتَغْفَرْتَنِي غَفَرْتُ لَكَ وَلاَ أُبَالِي يَا ابْنَ آدَمَ إِنَّكَ لَوْ أَتَيْتَنِي بِقُرَابِ الأَرْضِ خَطَايَا ثُمَّ لَقِيتَنِي لاَ تُشْرِكُ بِي شَيْئًا لأَتَيْتُكَ بِقُرَابِهَا مَغْفِرَةً ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
আনাস ইবনু মালিক (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমি বলতে শুনেছিঃ বরকতময় আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে আদম সন্তান! যতক্ষণ আমাকে তুমি ডাকতে থাকবে এবং আমার হতে (ক্ষমা পাওয়ার) আশায় থাকবে, তোমার গুনাহ যত অধিক হোক, তোমাকে আমি ক্ষমা করব, এতে কোন পরওয়া করব না। হে আদম সন্তান! তোমার গুনাহের পরিমাণ যদি আসমানের কিনারা বা মেঘমালা পর্যন্তও পৌছে যায়, তারপরও তুমি আমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করো, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব, এতে আমি পরওয়া করব না। হে আদম সন্তান! তুমি যদি সম্পূর্ণ পৃথিবী পরিমাণ গুনাহ নিয়েও আমার নিকট আস এবং আমার সঙ্গে কাউকে অংশীদার না করে থাক, তাহলে তোমার কাছে আমিও পৃথিবী পূর্ণ ক্ষমা নিয়ে হাজির হব।’ [সহিহ তিরমিজি : ৩৫৪০, সহিহাহ : ১২৭ ও ১২৮]
৪/৪. জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভ।
জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন :
عَنْ جَابِرٍ قَالَ : أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلٌ فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا الْمُوجِبَتَانِ ؟ فَقَالَ : مَنْ مَاتَ لَا يُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئًا دَخَلَ الْجَنَّةَ ، وَمَنْ مَاتَ يُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئًا دَخَلَ النَّارَ
‘যে আল্লাহর সাথে কোন প্রকার শিরক করা ব্যতীত (তাওহিদের উপর) মৃত্যুবরণ করবে, অবশ্যই সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে শিরকের উপর মৃত্যুবরণ করবে, সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।’ [সহিহ মুসলিম : ৯৩]
৫. উপসংহার
দুনিয়ার সুখ, শান্তি ও পরকালীন মুক্তির একমাত্র সোপান হলো বিশুদ্ধ আকিদাহ। তাই আসুন আমরা সকলেই আকিদাহ সহিস করার চেষ্ট করি। আল্লাহ আমাদের সকলকে তাওফিক দান করুন, আমিন।
আবার ভিজিট করবেন !!! ধন্যবাদ