ইসলামে নারী বিষয়ক বই ডাউনলোড করতে নিচে বইয়ের নামের নামের উপর ক্লিক করুন।
১। অন্য পথের কন্যারা – এনামুল হক
২। অন্যরকম কষ্ট – মাসুদা সুলতানা রুমী
৩। আদর্শ জননীরূপে একজন নারী – চৌধুরী আবুল কালাম আজাদ
১। অন্য পথের কন্যারা – এনামুল হক
২। অন্যরকম কষ্ট – মাসুদা সুলতানা রুমী
৩। আদর্শ জননীরূপে একজন নারী – চৌধুরী আবুল কালাম আজাদ
৪। আদর্শ নারী – আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ
৫। আদর্শ মা – মুফতি রূহুল আমীন যশোরী
৬। আদর্শ রমণী – আব্দুল হামিদ ফাইযী
৭। আদর্শ সমাজ গঠনে নারী – শামসুন্নাহার নিজামী
৮। আদর্শ স্ত্রীর পথ ও পাথোয়া – রূহুল আমীন যশোরী
৯। আধুনিক নারী ও ইসলামী শরিয়ত – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী
১০। আর নারীর ও রয়েছে অধিকার – ইকবাল হোসেন মাছুম
১১। আল কুরআনে নারী – মোশারফ হোসেন খান
১২। আল কুরআনে নারীদের ২৫ সূরা – মোরশেদা বেগম
১৩। আল হিজাব
১৪। আলোকিত নারী – মাওলানা তারিক জামীল
১৫। ইছলাহুন নিসওয়ানঃ মাতৃ জাতির সংশোধন – আশরাফ আলী থানবী
১৬। ইসলাম ও আধুনিক মুসলিম নারী – মরিয়ম জামিলা
১৭। ইসলাম ও নারী – মুহাম্মদ কুতুব শহীদ
১৮। ইসলামী বিপ্লবের সংগ্রাম ও নারী – ডঃ সাইয়েদ আস আদ গীলানী
১৯। ইসলামী হিজাব বা পর্দা – আব্দুল আযীয বিন বায
২০। ইসলামে নারী – আল বাহি আল খাওলী
২১। ইসলামে নারী বনাম ইহুদী ও খৃষ্ট্রান ধর্মে নারী– ড. শরীফ আব্দুল আজীম
২২। ইসলামে নারীর অধিকার সেকেলে নাকি আধুনিক – ড. জাকির নায়েক
২৩। ইসলামে নারীর উত্তরাধিকার – নুরুল ইসলাম
২৪। ইসলামের দৃষ্টিতে কন্যার মর্যাদা – ড. ফযলে ইলাহী
২৫। ইসলামের দৃষ্টিতে নারী – ফরিদ বেজদী আফেন্দী
২৬। ইসলামের দৃষ্টিতে নারী – বি. আইশা লেমু
২৭। ইসলামের দৃষ্টিতে নারী নেতৃত্ব – মুহাম্মদ রুহুল আমিন
২৮। ঋতুবতী নারীর রোজা ত্যাগ ও কাজা প্রসঙ্গ – আলী হাসান তৈয়ব
২৯। কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে পর্দা – মুহাম্মাদ ইবন সালেহ আল-উসাইমীন
৩০। কুরআন-সুন্নাহর আলোকে পোশাক পর্দা ও দেহসজ্জা – ড. খন্দকার আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর
৩১। কুরআনের আলোয় নারী – মুহাম্মদ জামালুদ্দীন
৩২। ডুবন্ত নারী ও ইসলাম – নঈম সিদ্দিকী
৩৩। দ্বীন প্রতিষ্ঠায় মহিলাদের দায়িত্ব – শামসুন্নাহার নিজামী
৩৪। নারী – মুহাম্মদ আবদুর রহিম
৩৫। নারী অধিকারের সনদ – দেলওয়ার হোসাইন সাঈদী
৩৬। নারীঃ ইসলামের দৃষ্টিতে – আল বাহি আল খাওলি
৩৭। নারীঃ ইসলামের পূর্বে ও পরে – মুতয়েব উমার আল হারেসী
৩৮। নারী উন্নয়ন নিতি – মীযানুর রহমান সাঈদ
৩৯। নারী ও আধুনিক চিন্তাধারা – মুহাম্মদ আবদুর রহিম
৪০। নারী ও পুরুষ পরস্পরের বন্ধু ও অভিভাবক – মাসুদা সুলতানা রুমী
৪১। নারী ও পুরুষ ভুল করে কোথায় – আল বাহি আল খাওলি
৪২। নারী ও পুরুষের একান্ত গোপনীয় কথা বা পুশিদাবাদ রাজ ও তানহা কি সবক – আশরাফ আমরহী
৪৩। নারী ও বাস্তবতা – শাহ আবদুল হান্নান
৪৪। নারী ও সমাজ – আবদুল খালেক
৪৫। নারী নির্যাতন ইসলামী সমাধান – গবেষণা পত্র
৪৬। নারী নির্যাতনের কারণ ও প্রতিকার – শামসুন্নাহার নিজামী
৪৭। নারী নির্যাতনের রকমফের – সরকার শাহাবুদ্দীন আহমেদ
৪৮। নারী পুরুষে দেখাদেখি নির্জনে অবস্থান ও সহাবস্থান সংক্রান্ত বিবিধ ফাতওয়া
৪৯। নারী মুক্তি আন্দোলন – শামসুন্নাহার নিজামী
৫০। নারী মুক্তি আন্দোলন ও ইসলাম – হাফেজা আসমা খাতুন
৫১। নারী শিক্ষা সম্পর্কে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি – ড. মোঃ আব্দুল কাদের
৫২। নারী সমাজে দাওয়াত ও সংগঠন সম্প্রসারণের উপায় – মতিউর রহমান নিজামী
৫৩। নারী সাহাবীদের ঈমানদীপ্ত জীবন – ড. আব্দুর রহমান রাফাত পাশা
৫৪। নারীদের জন্য অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া বিয়ে করা কি বৈধ – মুহাম্মদ আকমাল হুসাইন
৫৫। নারীদের পবিত্রতার জরুরি বিধান – আবু আহমাদ সাইফুদ্দীন বেলাল
৫৬। নারীদের ব্যাপারে সতর্কবাণী – নার্গিস আক্তার সুলতানা
৫৭। নারীদের যে বিষয় গুলো না জানলে নয় – আমির জামান ও নাজমা জামান
৫৮। নারীনিগ্রহ – আল মাহমুদ
৫৯। নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় ইসলাম – আব্দুর রাজ্জাক ইবন আব্দুল মুহসিন
৬০। নারীর জান্নাত যে পথে – সানাউল্লাহ নজির আহমদ
৬১। নারীর প্রাকৃতিক রক্তস্রাব – মুহাম্মদ বিন সালেহ আল উসাইমীন
৬২। নারীর হজ্জ ও উমরাহ – ড. আবুবকর মুহাম্মদ যাকারিয়া
৬৩। পর্দা – শাঈখ বিন বায ও শাঈখ হুসাইন
৬৪। পর্দা একটি ইবাদত – মাদারুল ওয়াত্বান শিক্ষা বিভাগ
৬৫। পর্দা একটি বাস্তব প্রয়োজন – শামসুন্নাহার নিজামী
৬৬। পর্দা ও বেপর্দার বিধান – আব্দুল আযীয বিন আব্দুল্লাহ বিন বায
৬৭। পর্দা ও ইসলাম – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী
৬৮। পর্দা কি প্রগতির অন্তরায় – সাইয়েদা পারভীন রেজভী
৬৯। পর্দাঃ কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে – মুহাম্মদ বিন সালেহ আল উসাইমীন
৭০। পর্দা কেন – মুহাম্মাদ ইবন আহমাদ
৭১। পর্দা প্রগতির সোপান – অধ্যাপক মাযহারুল ইসলাম
৭২। পর্দার আসল রুপ – এ.কে.এম. নাজির আহমদ
৭৩। পর্দার গুরুত্ব – খন্দকার আবুল খায়ের
৭৪। পর্দার বিধান – আব্দুল হামিদ আল মাদানী
৭৫। পর্দাহীনতার পরিণতি – জাকেরুল্লাহ আবুল খায়ের
৭৬। পুরুষ ও মহিলাদের স্বাভাবিক কর্মক্ষেত্র – এ.কে.এম. নাজির আহমদ
৭৭। পুরুষের পর্দা ও নারীর পর্দা – মুহাম্মদ আব্দুর রহমান খন্দকার
৭৮। পুরুষের মাঝে কর্মরত নারীর প্রতি আহ্বান – আবু সারা
৭৯। পোশাক পর্দা ও দেহ-সজ্জা – ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর
৮০। পোশাকের নিয়মাবলী – ড. জাকির নায়েক
৮১। প্রশ্ন উত্তরে ইসলামে নারীর অধিকার – ড. জাকির নায়েক
৮২। ফেরারী নারী – আবু বকর সিরাজী
৮৩। বাস্তবতার আলোকে নারীর মর্যাদা রক্ষায় হিজাবের ভূমিকা – নূর আয়েশা সিদ্দিকা
৮৪। বিবাহ ও তালাকের বিধান – মুহাম্মদ ইকবাল কিলানী
৮৫। বিবাহ ও নারীবাদ – মোঃ এনামুল হক
৮৬। বেহেশতের রমণীগণ – মোঃ নুরুজ্জামান
৮৭। বোরকা ওড়না সাজসজ্জা – মোফাজ্জল হক
৮৮। ভূবন জয়ী নারী – মুহাম্মদ যাইনুল আবিদীন
৮৯। মহিলা ফিকাহ ১ম খণ্ড – মুহাম্মদ আতাইয়া খামীস
৮৯। মহিলা ফিকাহ ২য় খণ্ড – মুহাম্মদ আতাইয়া খামীস
৯০। মহিলা সমাবেশে প্রশ্নের জবাব ১ম খণ্ড – দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী
৯০। মহিলা সমাবেশে প্রশ্নের জবাব ২য় খণ্ড – দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী
৯১। মহিলা সাহবী – নিয়ায ফতেহপুরী
৯২। মহিলা সাহাবী – তালিবুল হাশেমী
৯৩। মহিলাদের তালীমুল মাসায়েল হায়েয ও নিফাস – হামিদা পারভীন
৯৪। মহিলাদের স্রাব ও প্রসূতি অবস্থার বিধিবিধান সংক্রান্ত ৬০ টি প্রশ্ন – মুহাম্মদ বিন সালেহ আল উসাইমীন
৯৫। মহিলার নামায – আব্দুল হামিদ ফাইযী আল মাদানী
৯৬। মাতৃ জাতির সংশোধন – আশরাফ আলি থানবী
৯৭। মুমিন নারীদের বিশেষ বিধান – ড. সালেহ ইবন ফাওযান
৯৮। মুসলিম নারী এবং সমসাময়িক প্রেক্ষাপটে তার দায়িত্ব ও কর্তব্য – ড. ফালেহ ইবন মুহাম্মদ আস সুগাইর
৯৯। মুসলিম নারীর অধিকার ও দায়িত্বঃ ইসলামের ইশতিহার ও সনদ – ফায়সাল বিন খালেদ
১০০। মুসলিম নারীর নিকট ইসলামের দাবী – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী
১০১। মুসলিম নারীর সংগ্রাম সাধনা – শহীদুল ইসলাম মাজাহেরী
১০২। মুসলিম নারীর হিজাব ও সালাতের পোষাক – ইমাম ইবনে তাইমিয়া
১০৩। মুসলিম বোন ও পর্দার হুকুম – মুহাদ্দিস শাহ মুহাম্মদ ওয়ালিউল্লাহ
১০৪। মুসলিম মা বোনদের ভাবনার বিষয় – অধ্যাপক গোলাম আযম
১০৫। মুসলিম রমণী – মুহাম্মদ ওবায়দুল হক
১০৬। যুগে যুগে দাওয়াতী দ্বীনের কাজে মহিলাদের অবদান – মাসুদা সুলতানা রুমী
১০৭। রাসূলুল্লাহ সাঃ এর স্ত্রীগণ যেমন ছিলেন – মুয়াল্লিমা মোরশেদা বেগম
১০০। রাসূলের সাঃ যুগে নারী স্বাধীনতা ১ম খণ্ড — আবদুল হালিম আবু শুককাহ
১০১। রাসূলের সাঃ যুগে নারী স্বাধীনতা ২য় খণ্ড — আবদুল হালিম আবু শুককাহ
১০২। রাসূলের সাঃ যুগে নারী স্বাধীনতা ৩য় খণ্ড — আবদুল হালিম আবু শুককাহ
১০৩। রাসূলের সাঃ যুগে নারী স্বাধীনতা ৪র্থ খণ্ড — আবদুল হালিম আবু শুককাহ
১০৯। শরীয়তের দৃষ্টিতে পর্দার হুকুম – আশরাফ আলী থানবী
১১০। সংগ্রামী নারী – মুহাম্মদ নূরুয্যামান
১১১। সমাজ সংস্কারে নারীর ভূমিকা – মুহাম্মদ বিন সালেহ আল উসাইমীন
১১২। সম্পদে নারীর উত্তরাধিকারঃ ইসলামই দিয়েছে প্রাপ্তির নিশ্চয়তা – মুহাম্মদ আফীফ ফুরকান
১১৩। সৌন্দর্য প্রদর্শন বেপর্দা প্রসঙ্গে মুমিনদের জন্য কতিপয় নির্দেশনা – মুহাম্মদ বিন সালেহ আল উসাইমীন
১১৪। হিজাব ও সালাতে নারীর পোশাক পরিচ্ছেদ
ইসলামে নারী
মুসলমানদের বিশ্বাস অনুযায়ী ইসলাম হল মানুষের জন্য আল্লাহর প্রেরিত জীবন বিধান। মুসলিম নারীদের অভিজ্ঞতা বিভিন্ন সমাজের মধ্যে এবং বিভিন্ন সমাজের মধ্যে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়।
কুরআনে বেশ কয়েকজন নারীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তবে শুধু একজনেরই নামসহ উল্লেখ করা হয়েছে। আর তিনি হলেন মেরি। এমনকি বাইবেলেও এতবার উল্লেখ করা হয়নি। গোটা একটা অধ্যায়ই তার নামে নামকরন করা হয়েছে, যেটা সূরা মরিয়ম নামে পরিচিত। কুরআন অনুসারে, তিনি জন্ম থেকেই আল্লাহর রহমতপ্রাপ্ত। অল্পবয়সেই তিনি ফেরেসতাপ্রধান জীব্রাইলের মাধ্যমে আল্লাহর দেয়া বার্তা পান। যে তিনি তাকে নির্বাচিত করেছেন, পবিত্র করেছেন এবং তাকে উল্লেখযোগ্য করেছেন “দুনিয়ার সমস্ত নারীর মধ্য থেকে”।
নারীশিক্ষাঃ কুরআন, হাদীস এবং সুন্নাহ সবগুলোই পুরুষ ও নারীর জ্ঞানঅন্বেষণের অধিকারকে সমানভাবে সমর্থন করে। কুরআন সব মুসলিমকে জ্ঞানঅন্বেষণের প্রচেষ্টা নিতে আদেশ দিয়েছে, তাদের লিঙ্গ যাই হোক না কেন। এটা মুসলানদেরকে বারবার পড়তে, চিন্তা-ভাবনা করতে এবং প্রকৃতিতে আল্লাহপ্রদত্ত চিহ্ন থেকে শিক্ষা নিতে বারবার তাগীদ দিয়েছে। এছাড়াও নারী-পুরুষ উভইকেই মুহাম্মদ শিক্ষাঅর্জনে উদ্ভুদ্ধ করেছেন। তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন, জ্ঞানঅন্বেষণ প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য ধর্মীয় কর্তব্য। পুরুষের মত প্রত্যেক নারীই নীতিগত ও ধর্মিয় এমন বাধ্যবাধকতার অন্তর্ভূক্ত। যাতে তিনি জ্ঞানঅন্বেষণ করেন, নিজের বুদ্ধিবৃত্তিক সমৃদ্ধির চেষ্টা করেন, মননকে সমৃদ্ধ করেন, নিজের মেধা-প্রতিভার চর্চা করেন যাতে তার সুপ্ত সম্ভাবনার দ্বারা নিজে এবং তার সমাজ উপকার লাভ করতে পারে।
নারীদের ঘরের বাইরে যাওয়াঃ নারীদের ঘরের বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থ পবিত্র কোরআনের সূরা আহযাবে বলা হয়েছে,
“হে নবী, বলুন আপনার স্ত্রী ও কন্যাদেরকে এবং বিশ্বাসী নারীদেরকে যে, তাঁরা যেন তাঁদের বহিরাবরণ পরে থাকে (যখন বাইরে যাবে)। এটা তাঁদের পরিচিতির অত্যন্ত উপযোগী। (তাঁরা যেন পরিচিত হয় বিশ্বাসী নারী হিসেবে) তাহলে আর অহেতুক উৎপিড়ীত হবে না। আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল দয়াবান।” ৩৩:৫৯
সাধারণত ইসলাম সর্বাবস্থায় নারীদের ঘরে আবদ্ধ করে রাখার কথা বলে না। এ সম্পর্কে হযরত আয়েশা থেকে বর্ণিত,
“রাসূল বলেন, অবশ্যই প্রয়োজনে তোমাদের (নারীদের) বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে।” সহীহ বোখারী: ৪৪৩৬
তবে, সেক্ষেত্রে দূর যাত্রা হলে সাথে মাহরাম নিতে হবে। মাহরাম হল সাথে কোনো পুরুষ অভিভাবক থাকা। এ সম্পর্কে সহীহ বোখারী শরীফে হযরত ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিত,
“রাসূলুল্লাহ বলেছেন, মাহরামের উপস্থিতি ব্যতীত কোনো পুরুষ কোনো নারীর সাথে সাক্ষাৎ করতে পারবে না। এক ব্যক্তি ওঠে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞাসা করল, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমার স্ত্রী হজ্বে বেরিয়ে গেছে। এবং অমুক অমুক জিহাদে অংশগ্রহণের জন্য আমার নাম তালিকাভূক্ত করা হয়েছে। নবী বললেন, ফিরে যাও এবং স্ত্রীর সাথে হজ্ব সমাপন কর।
পর্দাঃ ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায়, অশ্লীলতা ও ব্যভিচার নিরসনের লক্ষ্যে নারী-পুরুষ উভয়েরই তাদের নিজ নিজ রূপ-লাবণ্য ও সৌন্দর্যকে একে অপরের চোখ থেকে আড়ালে রাখার জন্য ইসলামে যে বিশেষ ব্যবস্থা অবলম্বন করার নির্দেশ দিয়েছে, তাকে হিজাব বা পর্দা বলা হয়। ইসলাম মুসলমান নারী এবং পুরুষ উভয়ের ওপর পর্দা ফরজ করে দিয়েছে। এ সম্পর্কে মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থ পবিত্র কোরআনের সূরা নূরে বলা হয়েছে,
“প্রত্যেক বিশ্বাসী পুরুষদের বল, তাঁরা যেন তাঁদের দৃষ্টিকে অবনত রাখে। এবং তাঁদের লজ্জাস্থান সমূহ হেফাজত করে। এটাই তাঁদের জন্য উত্তম পন্থা। আল্লাহ তায়ালা সে বিষয়ে সম্পূর্ণ অবগত। এবং বিশ্বাসী নারীদেরকে বল, তাঁরা যেন তাঁদের দৃষ্টি অবনত রাখে। এবং তাঁদের লজ্জাস্থান সমূহের সংযত সংরক্ষণ করে এবং তাঁদের দৈহিক সৌন্দর্য ও অলংকারের প্রদর্শনী না করে। তবে, অনিবার্য ভাবে যা উন্মুক্ত থাকে (তাতে কোনো দোষ নেই)। তাঁরা যেন তাঁদের বক্ষের ওপরে চাদর ঝুলিয়ে দেয় এবং তাঁদের স্বামী, তাঁদের পিতা, শ্বশুর এবং সন্তানদের ছাড়া তাঁদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে।”২৪:৩০-৩১
ইসলামের গবেষকেরা এই আয়াত সমূহ এবং এ সংক্রান্ত হাদিসের ওপর ভিত্তি করে, নারী-পুরুষের পর্দার একটা সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। এক্ষেত্রে পুরুষের জন্য বাধ্যতামূলক হল, কমপক্ষে নাভী থেকে হাটু পর্যন্ত ঢেকে রাখা। আর নারীর জন্য বাধ্যতামূলক হল, কমপক্ষে দুই হাতের কব্জী এবং মূখ মন্ডল ছাড়া পুরো শরীর ঢেকে রাখা। কিছু কিছু বিশেষজ্ঞ বলেন, তাও ঢেকে রাখতে হবে। এছাড়া পর্দার বাকি শর্তগুলো হল: পরিধেয় পোশাক ঢিলেঢালা হবে। যেন দেহের মূল কাঠামো প্রকাশ না পায়। পোশাক এত পাতলা ও স্বচ্ছ হবে না, যাতে ভেতরটা দেখা যায়। পোশাক বিপরীত লিঙ্গকে আকর্ষণ করার মত আকর্ষণীয় হবে না। পোশাকের ধরন বিপরীত লিঙ্গের মত হবে না। এবং পোশাকের ধরন অবিশ্বাসীদের মত হবে না। এই শর্তগুলো নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য একই রকম।
উত্তরাধিকারঃ উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থ পবিত্র কোরআনে সূরা নিসায় বলা হয়েছে,
“তোমাদের সন্তানদের ব্যাপারে আল্লাহ তোমাদেরকে এই বিধান দিচ্ছেন: পুরুষের অংশ দুই নারীর সমান হবে। যদি দুই জনের বেশি নারী হয়, তাহলে সম্পদের দুই তৃতীয়াংশ দেয়া হবে। আর একজন নারী হলে মোট সম্পদের অর্ধেক পাবে। মৃত ব্যক্তির সন্তান থাকলে, তাঁর পিতা-মাতা প্রত্যেকে ছয় ভাগের এক ভাগ করে পাবে। আর সে যদি নিঃসন্তান হয়, পিতা-মাতাই হয় উত্তরাধিকারী, তাহলে মাকে দেয়া হবে তিন ভাগের একভাগ। মৃতের ভাই বোন থাকলে মা সেই ছয় ভাগের এক ভাগ পাবে। এসব বণ্টন মৃতের কোনো অসীয়ত থাকলে, তা এবং ঋণ থাকলে তা আদায় করার পরে। তোমাদের পিতা-মাতা এবং তোমাদের সন্তান-সন্ততী, তোমাদের জানা নাই এঁদের মধ্যে তোমাদের কল্যাণের দিক দিয়ে কারা ঘনিষ্টতর। এই বণ্টন ব্যবস্থা ফরজ করে দেয়া হয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে। আল্লাহ তো সব কিছুর ব্যপারেই পূর্ণ অবহিত এবং তিনিই হচ্ছেন বিজ্ঞ, পরম কুশলী। আর তোমাদের স্ত্রীরা যা কিছু রেখে গেছে, তার অর্ধেক তোমরা পাবে যদি তাঁরা নিঃসন্তান হয়। সন্তান থাকলে তোমরা পাবে ত্যক্ত সম্পত্তির চার ভাগের একভাগ। তাঁদের করে যাওয়া অসীয়ত এবং দেনা থাকলে, তা সব আদায়ের পর। আর তোমাদের রেখে যাওয়া সম্পদের তাঁরা পাবে চারভাগের একভাগ, যদি তোমাদের কোনো সন্তান না থাকে। সন্তান থাকলে তাঁরা পাবে আট ভাগের একভাগ। তাও কার্যকর হবে তোমাদের কোনো অসীয়ত এবং দেনা থাকলে তা আদায়ের পর। আর যদি এমন কোনো পুরুষ অথবা স্ত্রীলোক, যাঁর না আছে কোনো সন্তান, আর না আছে পিতা-মাতা। আছে এক ভাই অথবা এক বোন তাহলে তাঁদের প্রত্যেকে পাবে ছয় ভাগের এক ভাগ। আর ভাই বোন যদি দুই এর বেশি হয়, তাহলে তাঁরা সবাই মিলে মোট সম্পদের তিন ভাগের একভাগ পাবে। তাও কোনো অসীয়ত এবং ঋণ থাকলে তা আদায়ের পর। কোনোভাবেই কারো কোনো ক্ষতি করা বা হতে দেয়া যাবে না। (এসব কিছু) আল্লাহর দেয়া উপদেশমালা। আর আল্লাহ সব কিছুর ব্যাপারেই পূর্ণ অবহিত এবং পরম ধৈর্য্যশীল।”৪:১১-১২”
এবং
“তাঁরা আপনার কাছে ফতোয়া জানতে চায়। বলুন, আল্লাহ তোমাদেরকে ফতোয়া দিচ্ছেন, নিঃসন্তান ও পিতৃ-মাতৃহীন মৃত ব্যক্তির সম্পদ বণ্টন সম্পর্কে। যদি এমন ব্যক্তি মারা যায়, যাঁর কোনো সন্তান নেই, আছে এক বোন। তাহলে সে পাবে সম্পদের অর্ধেক আর যদি বোন মারা যায় তাহলে ভাই পুরো সম্পদের উত্তরাধিকারী হবে। মৃতের উত্তরাধিকারী যদি দুই বোন হয়, তাহলে ত্যক্ত সম্পত্তির তিন ভাগের দুই ভাগ তাঁরা পাবে। আর যদি কয়েকজন ভাই-বোন হয়, তাহলে পুরুষেরা পাবে দুই ভাগ, আর নারীরা পাবে এক ভাগ। আল্লাহ স্পষ্ট করে দিচ্ছেন তোমাদের জন্য যেন তোমরা বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে না যাও। প্রত্যেকটি জিনিস সম্পর্কেই আল্লাহ পূর্ণ অবহিত।” ৪:১৭৬
আয়াতত্রয়ীর বর্ণনা মতে, ত্যক্ত সম্পত্তির বণ্টনের বেলায় কোনো কোনো ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ দুজনেই সমান। কিছু কিছু ক্ষেত্রে নারী এগিয়ে। তবে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পুরুষ এগিয়ে।
সাক্ষীঃ মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআনে সূরা বাক্বারায় বলা হয়েছে,
“হে ঈমানদারগণ, যদি নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য তোমরা একে অপরের সাথে লেনদেন কর, তাহলে তা লিখে নিয়ো। অতঃপর তোমাদের নিজেদের মধ্যের দুজন পুরুষকে সাক্ষী বানাও। তখন যদি দুজন পুরুষের আয়োজন না করা যায়, তাহলে একজন পুরুষ এবং যাঁদের সাক্ষীর ব্যপারে তোমরা আস্থাশীল এমন দুজন নারী বেছে নাও। যেন, একজন ভুল করলে অন্যজন স্মরণ করিয়ে দিতে পারে।”
ইসলামী সমাজে নারী এবং পুরুষের প্রকৃতি এবং ভূমিকার পার্থক্যের ভিত্তিতে সাক্ষী দানের ক্ষেত্রে আলাদা মানদন্ড নির্ধারণ করেছে। লিঙ্গ বৈষম্য এক্ষেত্রে বিবেচ্য নয়।
মুসলমানদের কাছে তাদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআনের পরই নির্দেশনার জন্য মূল্যবান যে উৎস, তা হচ্ছে হাদিসগ্রন্থ।
“আবূ সা‘ঈদ খুদরী সূত্রে নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নারীদের সাক্ষ্য কি পুরুষদের সাক্ষ্যের অর্ধেক নয়? উপস্থিতরা বলল, অবশ্যই অর্ধেক। তিনি বলেন, এটা নারীদের জ্ঞানের ত্রুটির কারণেই। (৩০৪)” (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৪৬৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৪৮২) ”
হযরত আবু হুরায়রা সর্বাধিক ৫৩৭৪ টি হাদিস বর্ণনা করেছেন। আর তার বর্ণিত হাদিস সমূহ শুধু তার একক স্বাক্ষীর ওপরেই বিশুদ্ধতার সকল বিবেচনায় উত্তীর্ণ। আবার হাদিসগ্রন্থ সমূহের মধ্যে হযরত আয়েশা থেকে বর্ণিত হাদিসের সংখ্যা ২২১০ টি। যা সাহাবায়ে কেরামদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। তিনি একজন নারী। আর তার বর্ণিত হাদিস সমূহও শুধু তার একক সাক্ষ্যের ওপরেই বিশুদ্ধতার সকল বিবেচনায় উত্তীর্ণ। এক্ষেত্রে নারী-পুরুষে কোনো পার্থক্য নেই। ঘটনার প্রকৃতি ও ভূমিকা ঠিক থাকলে, ইসলামে একজন নারী সাক্ষীই যথেষ্ট। ইসলামী আইনশাস্ত্রবিদেরা অনেকেই এ ব্যাপারে একমত, যে চাঁদ দেখার ব্যপারে একজন বিশ্বাসী নারীর সাক্ষীই যথেষ্ট। তবে, ঘটনার প্রকৃতি এবং ভূমিকা বদলে গেলে সাক্ষীর ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের পার্থক্য সৃষ্টি হয়ে যায়। সাধারণত ইসলাম পর্দার বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ মনে করে। তাই ইসলাম নারীদের ওপর কোনো অর্থনৈতিক বাধ্যবাধকতা বা দায়দায়িত্ব আরোপ করেনি। যেসব ক্ষেত্রে ঘটনার প্রকৃতি আর্থিক এর মত (ইসলামী মতে যা অধিক পুরুষ সংশ্লিষ্ট) সেসব ক্ষেত্রে নারীদের তুলনায় পুরুষ সাক্ষীর ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
বিবাহঃ ইসলাম ধর্ম অনুসারে কোন নারী এক সাথে একাধিক স্বামী গ্রহণ করতে পারবে না। তবে, একজন পুরুষ একাধিক (সর্বোচ্চ চারজন) নারীর সাথে বিবাহে আবদ্ধ হতে পারবে। তবে, পুরুষদের মতই একজন নারী তার পছন্দের সৎপুরুষের কাছে নিজেকে বিয়ের জন্য পেশ করতে পারবে। কোনো অভিভাবক বা পুরুষ কোনো বিধবা অথবা কুমারী মহিলাকে তার অনুমতি ব্যতীত বিয়ে করতে বা দিতে পারবে না। এমনকি নারীর অনুমতি ব্যতীত অভিভাবক তাকে বিয়ে দিলে তা বাতিল করা যাবে। এ সম্পর্কে হযরত খানসা বিনতে খিযাম আল আনসারিয়া থেকে বর্ণিত,
“যখন তিনি বয়স্কা ছিলেন তখন তাঁর পিতা তাঁকে বিয়ে দেন। এ বিয়ে তাঁর পছন্দ ছিল না। এরপর রাসূলুল্লাহ এর কাছে গেলে তিনি তা বাতিল করে দেন।”৪৭৬৬
আবার ভিজিট করবেন !!! ধন্যবাদ