গ্রন্থ পরিচিতঃ ইসলামী দুনিয়ার একটি অবিস্মরণীয় নাম হচ্ছে শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী। আর ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ’ হল তাঁর এক অবিনশ্বর কীর্তি। এ মহাগ্রন্থ শুধু মুসলিম জাহানেই নয়, সারা বিশ্বে এক মহা বিস্ময় হয়ে আছে। এ মহাগ্রন্থের মহান গ্রন্থকার কে ছিলেন তা বলা সহজ, কিন্তু কি ছিলেন তা অনুধাবন করা এ অধম তো দূরে, কোন উত্তমের পক্ষেও নিতান্তই দুরূহ ব্যাপার। তাই তাঁর গ্রন্থের ভাষান্তর ব্রতটি যে স্বতঃসিদ্ধ এক দুঃসাধ্য সাধনা তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
আল্লাহ পাকের লাখ লাখ শুকরিয়া যে, তিনি এ অধম বান্দাকে সেই দুঃসাধ্য সাধনার দুঃসাহস দান করেছেন আর তাওফিক দিয়েছেন তার পয়লা পর্ব সমাপ্ত করার। তাই তাঁরই সমীপে এ অধমের ঐকান্তিক প্রার্থনা, যেন তিনি এর দ্বিতীয় পর্ব সমাপ্ত করার তাওফিকও এ অধমকে এনায়েত করেন। ওয়ামা তাওফিকী ইল্লা বিল্লাহ।
অসংখ্যদরূদ ও সালাম সেই মহানবী (সঃ)-এর উদ্দেশ্যে যে মহাজ্যোতিস্কের অপূর্ব জ্যোতি প্রভায় উপ-মহাদেশে এ বিস্ময়কর জ্যোতিষ্কের আবির্ভাব ঘটেছে। মহান রাব্বুল আলামীন তাঁর আল-আসহাবের ওপরও এ অধমের দরূদ ও ছালাম পৌঁছে দিন। আমীন।
বস্তুতঃ ‘ফালিল্লাহিল হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ’ আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের প্রতিটি বাণী ও বিধানই যে অকাট্য দলীল-প্রমাণ ধ্বারা প্রতিষ্ঠিত তাঁর জ্বলন্ত স্বাক্ষর বয়ে চলছে হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ। তাঁর লৌকিক কি পারলৌকিক, জৈবিক কি আত্মিক কোন বাণী ও বিধানই যে অযৌক্তিক ও অবাস্তব নয় এ মহা গ্রন্থের প্রতিটি পাতায় তার বলিষ্ঠ প্রমাণ যথার্থ ঈমানদার, আমলদার, এমন কি সম্ভবতঃ আল্লাহ ওয়ালায় পরিণত করতে সক্ষম।
তবে কথা হচ্ছে, লাখো গুরুর যিনি গুরু তাঁর গ্রন্থ স্বভাবতঃই গুরুজনদের জন্যে লিখেছেন যেন গুরুজনরা তা অনুধাবন করে লঘুজনদের পথনির্দেশ করেন। তাই লঘুজনরা যে সরাসরি এ গ্রন্থ হজম করতে পারবেন তা আশা করাই বাতুলতা মাত্র। এ কারণেই আশা করি লঘুজনরা গুরুজনদের মাধ্যম ছাড়া কখনও এ গ্রন্থ গলাধঃকরণ করতে গিয়ে জটিলতার শিকার হবেন না।
আধুনিক বিশ্বের এটাই বিস্ময় যে, দু’শ বছর আগের এক জ্ঞানতাপস কি করে একালের জটিল সমাজ বিজ্ঞান, রাষ্ট্র বিজ্ঞান ও অর্থনীতির এরূপ অত্যাধুনিক বিশ্লেষণ ও নীতিমালা দিয়ে গেলেন। আর কি করেই বা তিনি একালের প্রাত্যাহিক জটিল সমস্যাগুলোর এরূপ স্থায়ী সমাধান আবিস্কার করলেন। জ্ঞানের জগতে এরূপ অভাবনীয় দূরদর্শিতার নজীর তাদের সামজে আজও অনুপস্থিত।
শরীয়তের ছোট-বড় প্রতিটি বিধানই যে মানবকুলের জন্যে অশেষ কল্যাণপ্রদ ও তাদের সকল ব্যাধি নিরসনের অমোঘ বিধান তা এত অকাট্যভাবে এ গ্রন্থে উপস্থাপন করা হয়েছে যা এ কালের তর্কশাস্ত্রের মহাপণ্ডিতরাও খণ্ডন করতে পারবেন না। আল্লাহর দ্বীন কবুল করার তাওফিক যার হয়নি তাকেও এ গ্রন্থ মানিয়ে ছাড়বে যে, মূলতঃ এ দ্বীনই সত্য দ্বীন। হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগার এটাই শ্রেষ্ঠতম সাফল্য।
মালা-এ-আ’লার সর্বোচ্চপরিমণ্ডল পরিবৃত্ত অবস্থায় যে মহাগ্রন্থ রচিত হয়েছে মালা-এ আসফালের সর্বনিম্ন পরিমণ্ডলের এ অধম বাসিন্দা তার কতটুকু মর্ম উদ্ধার করতে পেরেছে তা আল্লাহই ভাল জানেন। তবে সান্ত্বনা এই যে, যথাসাধ্য চেষ্টার ত্রুটি হয়নি। তাই বলছি, এক মহামানবের এ মহান গ্রন্থের কিছুমাত্র মর্ম উদ্ধার করে ও যদি জাতিকে উপহার দিতে সমর্থ হয়ে থাকি, তার সব কৃতিত্বই আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের। পক্ষান্তরে এ ক্ষেত্রে যা কিছু ব্যর্থতা ও ভুল-ভ্রান্তি তার সব দায়-দায়িত্ব একান্তই আমার, তাই অনুরোধ, কোন সহৃদয় গুরুজন যদি এ ক্ষেত্রে আমাকে সহায়তা করতে এগিয়ে আসেন তা হলে সানন্দে ও সকৃতজ্ঞ চিত্তে তা গ্রহণ করা হবে।
শাহ ওয়ালীউল্লাহ দেহলভী কর্তৃক রচিত হজ্জতুল্লাহিল বালিগাহ pdf বই ডাউনলোড করতে নিচে বইয়ের নামের উপর ক্লিক করুন।
হজ্জতুল্লাহিল বালিগাহ ১ম খণ্ড
হজ্জতুল্লাহিল বালিগাহ ২য় খণ্ড
আবার ভিজিট করবেন !!! ধন্যবাদ