আত্ম অহমিকা ও দাম্ভিকতা মানুষকে আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত করে। তাই মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনের মাধ্যমে তাঁর বান্দাদের এই গুরুতর পাপের ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই তিনি (আল্লাহ) অহংকারীদের ভালোবাসেন না।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ২৩)
শুধুমাত্র অহংকারের কারণে ইবলিস শয়তান অনন্তকালের জন্য অভিশপ্ত হয়েছে।
এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘যখন আমি ফেরেশতাদের বললাম, তোমরা আদমকে সিজদা করো, তখন ইবলিস ছাড়া সবাই সিজদা করল। শুধু সে অহংকারবশত সিজদা করতে অস্বীকার করল। আর সে কাফিরদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ৩৪)
অহংকার এতটাই ভয়াবহ পাপ যে মহান আল্লাহ পরকালে অহংকারীর ঠিকানা করেছেন জাহান্নাম।
তাই নবীজি (সা.) সাহাবায়ে কেরামকে এই অভ্যাসের ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, জাহান্নাম ও জান্নাত পরস্পর তর্ক করছিল। জাহান্নাম বলল, আমাকে দাম্ভিক ও অহংকারী মানুষ দেওয়া হয়েছে, যা তোমাকে দেওয়া হয়নি। জান্নাত বলল, আমার কী দোষ যে দুর্বল, অক্ষম ও গুরুত্বহীন মানুষগুলোই আমার ভেতর প্রবেশ করছে।
(মুসলিম, হাদিস : ২৮৪৬)
পৃথিবীর ইতিহাসে বহু মানুষ অহংকারের কারণে ধ্বংস হয়েছে। কারো কারো ধ্বংস মহান আল্লাহ বিশ্ববাসীর জন্য শিক্ষা হিসেবে রেখে দিয়েছেন। তেমনি ধ্বংসপ্রাপ্ত এক অহংকারী হলো কারুন। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে কারুনের জুলুম ও তার শেষ পরিণতির কথা এভাবে তুলে ধরেন, ‘কারুন ছিল মুসা (আ.)-এর সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তি। কিন্তু সে তাদেরই প্রতি জুলুম করল।
আমি তাকে এমন ধনভাণ্ডার দিয়েছিলাম, যার চাবিগুলো বহন করা একদল শক্তিমান লোকের পক্ষেও কষ্টকর ছিল। স্মরণ করো, তার সম্প্রদায় তাকে বলেছিল, দম্ভ কোরো না, নিশ্চয়ই আল্লাহ দাম্ভিকদের পছন্দ করেন না। সে বলল, এসব তো আমি আমার জ্ঞানবলে লাভ করেছি। সে কি জানত না যে আল্লাহ তার আগে এমন বহু মানবগোষ্ঠীকে ধ্বংস করেছিলেন, যারা শক্তিতেও তার অপেক্ষা প্রবল ছিল এবং লোকবলেও বেশি ছিল? অপরাধীদের তাদের অপরাধ সম্পর্কে জিজ্ঞেসও করা হয় না। পরিণামে আমি তাকে তার প্রাসাদসহ ভূগর্ভে ধসিয়ে দিলাম। তার স্বপক্ষে এমন কোনো দল ছিল না যারা আল্লাহর শাস্তি থেকে তাকে সাহায্য করতে পারত এবং সে নিজেও পারল না আত্মরক্ষা করতে। ওই পরকালীন নিবাস তো আমি সেই সব লোকের জন্যই নির্ধারণ করব, যারা পৃথিবীতে ঔদ্ধত্য দেখাতে ও ফাসাদ সৃষ্টি করতে চায় না। শেষ পরিণাম তো মুত্তাকিদেরই অনুকূল থাকবে।’ (সুরা : কাসাস, আয়াত : ৭৬-৮৩)
আমাদের সবার উচিত, গর্হিত এই অভ্যাসটি ত্যাগ করা। অহংকারমুক্ত মানসিকতা তৈরিতে সচেষ্ট হওয়া। নিজের সন্তান-সন্ততিকেও নম্রতার শিক্ষা দেওয়া। মহান আল্লাহ সবাইকে তাওফিক দান করুন। আমিন।
আবার ভিজিট করবেন !!! ধন্যবাদ